Chitra Nodir Pare | চিত্রা নদীর পারে (2024) - Movie

Favorite 0

চিত্রা নদীর পারের শান্ত মফস্বলী শহর নড়াইল। পঞ্চাশ ও ষাটের দশকের ঘটনা। হিন্দু ও মুসলমান দুই সম্প্রদায়ের মানুষ যুগ যুগ ধরে এদেশে পাশাপাশি সৌহার্দ্যপূর্ণভাবে বসবাস করে আসছে। কিন্তু ১৯৪৭ সালের দেশভাগজনিত সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা সে সম্পর্কে চিড় ধরায়। ছবির কাহিনী শুরু ১৯৪৭ সালের কোনো এক শীতবিকেলে। নদীর পারে কয়েকটি শিশু খেলা করছে। নাজমা, সালমা, বাদল, মিনতি, বিদ্যুৎ বিভিন্ন বয়সের বালকবালিকা সব। নাজমা, সালমা ও বাদল ভাইবোন। ওদের পাশের বাড়ীতে থাকে মিনতি ও বিদ্যুৎ। মিনতির বাবা মাঝবয়সী বিপত্মীক শশীকান্ত সেনগুপ্ত পেশায় উকিল। ওদের সঙ্গে বাস করেন মিনতি-বিদ্যুতের পিসীমা স্নেহময়ী বিধবা অনুপ্রভা দাসী। চিত্রা নদীর কিনারেই শশীকান্ত বাবুদের পুরনো একতলা একটি বাড়ী। বাড়ীর নাম “পান্থনীড়”। পাকিস্তান আমলের সাম্প্রদায়িকতার সেই বিকারের দিনগুলিতে এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ব্যাপক দেশত্যাগের প্রেক্ষিতে অনেকেরই নজর ওই বাড়ীটির উপর। কিন্তু শশীকান্তবাবু এদেশ ছেড়ে কখনোই যেতে চান না। সময় গড়িয়ে যেতে থাকে। বালকবালিকা বাদল ও মিনতি আজ তরুণ-তরুণী। মিনতি নড়াইল কলেজে পড়ে এবং বাদল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যায়। ভিন্ন সম্প্রদায়ের হলেও শৈশবের খেলার সাথী দুই তরুণ-তরুণীর মধ্যে এক সময় জন্মায় প্রেমের অনুভূতি। তরুণ বাদল পড়তে যায় ষাট দশকের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। সারা দেশ জুড়েই তখন গণতন্ত্র ও স্বাধিকারের দাবীতে ছাত্রসমাজ উত্তাল। বাদলও ছাত্ররাজনীতিতে জড়িয়ে পড়ে এবং সামরিক শাসনবিরোধী ছাত্রমিছিলে একদিন পুলিশের গুলিতে নিহত হয়। শশীকান্ত বাবুর বড় ভাই নিধুকান্তবাবু গ্রামে থেকে হোমিওপ্যাথির ডাক্তারি করেন। তার বিধবা মেয়ে বাসন্তী দুর্গাপূজার সময় দাঙ্গায় ধর্ষিতা হয়। বাসন্তী চিত্রা নদীতে ডুবে আত্মহত্যা করে। নিধুকান্তবাবুর পরিবার দেশত্যাগ করে ভারতে চলে যায়। চারিদিকের এতসব ঘটনা শশীকান্তবাবুর অসুস্থতা বাড়িয়ে তোলে। এক বিকেলে চিত্রা নদীর পারে তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। মিনতি ও পিসীমা “পান্থনীড়” ত্যাগ করে কলকাতার উদ্দেশ্যে পাড়ি জমায়। আর তার কিনারে বহমান এই মানবনাট্যের এক চিরন্তন সাক্ষী হিসেবে বয়ে চলে চিত্রা নদী।

  • Published: Oct 3, 2024
  • 01:46:13
  • Suggest Story Plot