Favorite 0

১৯৭১ সালের ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহ। মুক্তিযুদ্ধের শেষ পর্যায়ের দিনগুলি। রূপসা নদীর পারে ইব্রাহীমপুর গ্রাম। ইব্রাহীমপুর গ্রামে এক পাকিস্তানী ক্যাপ্টেন তার বাহিনী নিয়ে আস্তানা গেড়েছে। নদীর কিনার ধরে রয়েছে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বাঙ্কার। ইব্রাহীমপুরের শান্তিকমিটির চেয়ারম্যান এমদাদ কাজীর বাড়ীতে থাকে তার সম্বন্ধি মৃত আলতাফ কাজীর দুই তরুণী মেয়ে রাবেয়া ও রোকেয়া। এমদাদ কাজীর ইচ্ছা নিজের পুত্র তরিকুলের সঙ্গে রাবেয়ার বিয়ে দেবার। এতিম দুই বোন রাবেয়া-রোকেয়ার একমাত্র ভাই কলেজে পড়া যুবক খালেদ মুক্তিবাহিনীতে যোগ দেয়। যুদ্ধের প্রায় শেষ পর্যায়ে, যখন পাকিস্তানী বাহিনীর পরাজয় অবশ্যাম্ভাবী এবং মুক্তিযোদ্ধারা পৌঁছে গেছে গ্রামের পাশে রূপসা নদীর ওপারেই, তখন একরাতে গেরিলাদের ইব্রাহীমপুর অপারেশনের সময় নিহত হয় মুক্তিযোদ্ধা খালেদ। পাকিস্তানী ক্যাপ্টেন ও শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান এমদাদ কাজী মিলে নির্দেশ দেয় খালেদের লাশ কবর দেয়া যাবে না। নদীর পারে বাঁধের উপর ফেলে রাখতে হবে যাতে গ্রামবাসীদের ভীতসন্ত্রস্ত রাখা যায়। এমদাদ কাজীর রাজাকার বাহিনীর উপর দায়িত্ব পড়ে এই লাশ পাহারা দেবার। ভাইয়ের মৃতদেহের এই অবমাননা রাবেয়া মেনে নিতে পারে না। কয়েকবার ব্যর্থ চেষ্টার পর একরাতে সে একাই বেড়িয়ে পড়ে সকল বিপদ উপেক্ষা করে ভাইয়ের লাশ কবর দিতে। রাজাকারদের গুলিতে রাবেয়া নিহত হয়। গ্রামবাসীরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। ইব্রাহীমপুর গ্রামে মুক্তিযোদ্ধাদের বিজয় ত্বরান্বিত হয়। বিজয়ী মুক্তিযোদ্ধারা গ্রামে প্রবেশ করে। রাবেয়ার এই সংগ্রাম ও আত্মত্যাগের কথা জেনে মুক্তিযোদ্ধারা অসমসাহসী রাবেয়ার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তাঁকে শহীদ হিসেবে ঘোষণা দেয়।

  • Published: Oct 8, 2024
  • 01:43:12
  • Suggest Story Plot